ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে ২০২৪ জেনে নিন
ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে - টাকা পয়সা লেনদেনের জন্য একটি ব্যাংক একাউন্ট প্রয়োজন। বর্তমানে সময়ে প্রত্যেকের একটি ব্যাংক একাউন্ট থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তাই টাকা-পয়সা রাখার নিরাপদ আবাস্থল হলো ব্যাংক। ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে সেই সব তথ্য নিয়েই আজকের এই পোস্টের আয়োজন। তাই এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে নিয়ে কিছু কথা
বর্তমানে টাকা-পয়সা জমা রাখার নিরাপদ আবাস্থল হলো ব্যাংক। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের টাকা-পয়সার লেনদেন করতে হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। তাই আপনার ব্যাংক একাউন্ট থাকা জরুরী। যদি আপনার এই মুহূর্তে একটি ব্যাংক একাউন্ট না থাকে তবে আপনি অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছেন। কাজেই, আপনার ব্যাংক একাউন্ট খোলা প্রয়োজন। অনেকেই ব্যাংক একাউন্ট খোলা একটী ঝামেলার কাজ মনে করে। কিন্তু যদি আপনি সঠিক নিয়মে সকল ডকুমেন্ট সাবমিট করেন তবে কোন ঝামেলা ছাড়াই আপনি একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলে নিতে পারবেন। এজন্যে আপনাকে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে এই ব্যাপারে জেনে রাখতে হবে।
ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে - new bank account open
যদি আপনার একটি ব্যাংক একাউন্ট না থাকে তবে আপনার অবশ্যই ব্যাংক থেকে একটি একাউন্ট খুলে নিতে হবে। তবে ব্যাংকে একাউন্ট খোলার আগে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগবে এই সম্পর্কে অবশ্যই আপনার জানা থাকতে হবে। কেননা ব্যাংক একাউন্ট খুলতে যেসব ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র লাগবে এই গুলো যদি আপনি সংগ্রহ না করেন তবে আপনি কোনভাবেই ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন না। একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে যা লাগে তা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহ
যদি আপনি নতুন করে ব্যাংকে একটি একাউন্ট খুলতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে রাখতে হবে। এসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট ছাড়া ব্যাংকে একাউন্ট খোলা যায়। ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে যেসব কাগজপত্র লাগবে তা নিচে উল্লেখ হলো।
- জাতীয় পরিচয় পত্র
- পাসপোর্ট ছবি
- নাগরিকত্ব
- আবেদন ফরম
- নমিনি
- ট্রেড লাইসেন্স
- স্টুডেন্ট আইডি কার্ড/প্রত্যয়ন পত্র
সাধারণত নতুন ব্যাংক একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে এসব ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া একাউন্টের ধরনের উপর নির্ভর করে আরও বেশ কিছু ডকুমেন্ট ও কাগজপত্র প্রয়োজন হয়।
পরিচয় পত্র
ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য পরিচয় পত্র বাধ্যতামূলক। যদি আপনি ব্যাংক একাউন্ট করতে চান তবে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র/ জন্ম নিবন্ধন / পাসপোর্টের প্রয়োজন। হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
পাসপোর্ট ছবি
ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি সাথে নিয়ে আসতে হবে।
নাগরিকত্ব
বাংলাদেশের যেকোন ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে হলে আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। তাছাড়া আপনি কোনভাবেই বাংলাদেশের কোন ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারবেন না।
আবেদন ফরম
আপনার সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করার পর যদি আপনার কাছে আবেদন ফরম না থাকে তাহলে সবকিছুই বৃথা। তাই আপনি যে ব্যাংকে একাউন্ট তৈরি করতে চান, সে ব্যাংকে গিয়ে একটি আবেদন ফরম নিয়ে সবকিছু পূরণ করবেন। অথবা আপনি চাইলে অনলাইন থেকেও প্রতিটি ব্যাংকের আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করে নিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করতে পারবেন।
নমিনি
ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য অবশ্যই একজন নমিনির প্রয়োজন। নমিনি জাতীয় পরিচয় পত্রে ফটোকপি ও সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন হবে।
ট্রেড লাইসেন্স
আপনি যদি একজন ব্যবসায়ী হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আপনার একটি ট্রেড লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে। এখানে আপনার আয়ের সকল তথ্য একাউন্ট করার সময় উল্লেখ করতে হবে।
স্টুডেন্ট আইডি কার্ড/প্রত্যয়ন পত্র
যদি আপনি ছাত্র/ছাত্রী থাকা অবস্থায় একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে চান তবে আপনার স্টুডেন্ট কার্ড অথবা আপনি যে প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন সেই প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়ন পত্র দরকার হবে।
একাউন্টের ধরন অনুযায়ী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি প্রয়োজন
একাউন্ট ধরণ অনুযায়ী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে অতিরিক্ত আরও কিছু ডকুমেন্ট লাগতে পারে। ব্যাংক একাউন্ট বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। তার মধ্যে ব্যক্তিগত একাউন্ট, জয়েন্ট একাউন্ট, প্রোপাইটরশিপ একাউন্ট ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের একাউন্ট হতে পারে। একাউন্ট ধরণ অনুযায়ী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে যা যা লাগতে পারে তা নিচে দেওয়া হলো-
ব্যক্তিগত একাউন্টের ক্ষেত্রে
কারেন্ট ডিপোজিট / শর্ট টার্ম ডিপোজিট একাউন্ট
১। জাতীয় পরিচয় পত্র/বৈধ পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র
২। ঠিকানা প্রমানের জন্য ডকুমেন্ট যেমন -বিদ্যুৎ বিল /পানির বিল /গ্যাস বিলের ফটোকপি।
৩। আয়ের উৎস প্রমানের জন্য ভিজিটিং কার্ড/জব আইডি (গ্রাহক চাকরি করলে)
৪। স্টুডেন্ট আইডি (গ্রাহক স্টুডেন্ট হলে)
৫। ই-টিন সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
সেভিংস ডিপোজিট একাউন্ট
১। জাতীয় পরিচয় পত্র/বৈধ পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র
২। ঠিকানা প্রমানের জন্য ডকুমেন্ট যেমন -বিদ্যুৎ বিল /পানির বিল /গ্যাস বিলের ফটোকপি।
৩। আয়ের উৎস প্রমানের জন্য ভিজিটিং কার্ড/জব আইডি (গ্রাহক চাকরি করলে)
৪। স্টুডেন্ট আইডি (গ্রাহক স্টুডেন্ট হলে)
৫। ই-টিন সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
জয়েন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে
কারেন্ট ডিপোজিট / শর্ট টার্ম ডিপোজিট একাউন্ট
১। জাতীয় পরিচয় পত্র/বৈধ পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র
২। ঠিকানা প্রমানের জন্য ডকুমেন্ট যেমন -বিদ্যুৎ বিল /পানির বিল /গ্যাস বিলের ফটোকপি।
৩। আয়ের উৎস প্রমানের জন্য ভিজিটিং কার্ড/জব আইডি (গ্রাহক চাকরি করলে)
৪। স্টুডেন্ট আইডি (গ্রাহক স্টুডেন্ট হলে)
৫। ই-টিন সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
৬। জয়েন্ট ডিক্লারেশন
সেভিংস ডিপোজিট একাউন্ট
১। জাতীয় পরিচয় পত্র/বৈধ পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র
২। ঠিকানা প্রমানের জন্য ডকুমেন্ট যেমন -বিদ্যুৎ বিল /পানির বিল /গ্যাস বিলের ফটোকপি।
৩। আয়ের উৎস প্রমানের জন্য ভিজিটিং কার্ড/জব আইডি (গ্রাহক চাকরি করলে)
৪। স্টুডেন্ট আইডি (গ্রাহক স্টুডেন্ট হলে)
৫। ই-টিন সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
৬। জয়েন্ট ডিক্লারেশন
প্রোপাইটরশিপ একাউন্টের ক্ষেত্রে
কারেন্ট ডিপোজিট / শর্ট টার্ম ডিপোজিট একাউন্ট
১। জাতীয় পরিচয় পত্র/বৈধ পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র
২। বৈধ ট্রেড লাইসেন্স
৩। প্রোপাইটরশিপ ডিক্লারেশন
৪। টিন সার্টিফিকেট
পার্টনারশিপ একাউন্টের ক্ষেত্রে
কারেন্ট ডিপোজিট / শর্ট টার্ম ডিপোজিট একাউন্ট
১। জাতীয় পরিচয় পত্র/বৈধ পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র
২। বৈধ ট্রেড লাইসেন্স
৩। পার্টনারশিপ ডিক্লারেশন
৪। রেজিস্টার্ড পার্টনারশীপ ডিড
৫। টিন সার্টিফিকেট
৬।পার্টনারদের তালিকা
৭। একাউন্ট খোলার জন্য রেজুলেশন
পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি একাউন্টের ক্ষেত্রে
। জাতীয় পরিচয় পত্র/বৈধ পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র
২। বৈধ ট্রেড লাইসেন্স
৩। মেমোরান্ডাম অন্ড আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশন
অব দ্য কোম্পানি ডিউলি অ্যাটেস্টেড চেয়ারম্যান/এমডি
৪। সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন
৫। সার্টিফিকেট অব কমেন্সমেন্ট
৬। টিন সার্টিফিকেট
৭। ডিরেক্টরদের তালিকা
৮। একাউন্ট খোলার জন্য রেজুলেশন
উপসংহার
উপরোক্ত আলোচনায় আমরা ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে এই বিষয়ে জানলাম । ব্যাংকে একাউন্ট খোলা একদম সহজ যদি আপনার প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র ও ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা থাকে। আজকে আমি আপনাদের সাথে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই পোস্টটি তথ্যবহুল মনে হলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url