ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি - ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন আবেদন
ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি - যদি আপনি একজন ডাচ বাংলা ব্যাংকের গ্রাহক হয়ে থাকেন তবে আপনি খুব সবজেই অল্প সুদে যখন তখন ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন গ্রহন করতে পারবেন।
সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে। সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বৈধ দেখিয়ে নূন্যতম ৩০ হাজার টাকা মাসিক আয়ের ব্যক্তিগণ খুব সহজেই ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারেন। সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, আজকের এই পোস্টটি ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম নিয়েই সাজানো হয়েছে। তাই এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ পড়ুন।
ব্যাংক লোন কাকে বলে?
ব্যাংক লোন হচ্ছে ব্যক্তিগত কিংবা ব্যবসার আর্থিক সংকট দূর করতে ব্যাংক কতৃক যে লোন দেওয় তাকে মূলত ব্যাংক লোন বলা হয়।ব্যক্তিগত,ব্যবসা চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি কারণে ব্যাংক কতৃপক্ষ ব্যাংক লোন প্রদান করে।
ডাচ বাংলা ব্যাংকের লোনের ধরণঃ
ডাচ বাংলা ব্যাংকের বিভিন্ন ধরনের লোন রয়েছে। তবে আপনার জন্য যে লোন-টি উপযুক্ত মনে হয় আপনি সে লোন-টি নিতে পারেন। নিচে ডাচ বাংলা ব্যাংকের লোনের ধরণ দেওয়া হলো-
- পার্সোনাল লোন
- হোম লোন
- ব্যবসায়িক লোন
- কার লোন
- শিক্ষা লোন
- স্যালারি লোন
- প্রবাসী লোন
ডাচ বাংলা পার্সোনাল লোন
ব্যক্তিগত কিংবা তার বিশেষ কোন প্রয়োজনে এই পার্সোনাল লোন গ্রহণ করা যাবে। পার্সোনাল লোন আপনি সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে স্বনির্ভর হতে হবে। আর পার্সোনাল লোন গ্রহণ করতে অবশ্যই বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে রাখতে হবে।
ডাচ বাংলা ব্যাংক পার্সোনাল লোন গ্রহণ করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন গ্রহণ করার জন্য অবশ্যই আবেদনকারীর বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট লাগবে। তাছাড়াও আরও বেশ কিছু শর্ত সাপেক্ষে আপনি লোন গ্রহণ করতে পারেন।
আরও পড়ুন: সোনালী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পদ্ধতি
ডাচ বাংলা থেকে পার্সোনাল লোন গ্রহণ করার জন্য অবশ্যই আপনাকে স্বনির্ভর হতে হবে এবং আপনার মাসিক আয় ২০ হাজার টাকা হতে হবে। তবেই আপনি ডাচ বাংলা ব্যাংক নিতে সক্ষম হবেন। নিচে ডাচ বাংলা ব্যাংক পার্সোনাল লোন গ্রহণ করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো দেওয়া হলো-
- আবেদনকারীর সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- আবেদনকারী চাকুরীজীবী পেশায় জড়িত হলে ইইন্ট্রোডাকশন লেটার, বেতন হিসাবের বিবরণী ও অফিস আইডি
- আবেদনকারী ব্যবসায়ী হলে বিজনেস কার্ড
- আবেদনকারী ড্রাইভার হলে ড্রাইভিং লাইসেন্স
- আবেদনকারীর T&T, মোবাইল ফোন বা অন্যান্য ইউটিলিটি বিলের কপি
- সর্বশেষ ১ বছরের ব্যাংক হিসাব
- আবেদনকারীর ট্যাক্স সার্টিফিকেট
সাধারণত ডাচ বাংলা থেকে পার্সোনাল লোন গ্রহণ করতে চাইলে এসব ডকুমেন্ট লাগতে পারে। তাছাড়াও যদি অতিরিক্ত আরও বেশকিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট লাগে তাহলে ব্যাংক থেকে আপনাকে বলে দিবে। তাই এসব কাগজপত্র লোন নেওয়ার আগে থেকেই সংগ্রহ করে রাখুন।
যারা পার্সোনাল লোন গ্রহণ করতে পারবে
আপনারা যারা পার্সোনাল গ্রহণ করতে চান তারা ডাচ বাংলা ব্যাংকের পার্সোনাল লোন গ্রহণ করতে পারবেন কি না তা আপনার জেনে রাখা প্রয়োজন। নিচে দেওয়া হলো-
- বাড়িওয়ালা
- যেকোনো ধরণের ব্যবসায়ী
- বেতনভোগী ব্যক্তি
- যেকোনো পেশার মানুষ
পার্সোনাল লোনের পরিমাণ, সুদ এবং মেয়াদ:
ধরুন আপনি ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে ব্যক্তিগত ঋণ নিতে আগ্রহী। তবে ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত পার্সোনাল লোন নিতে পারবেন। ডাচ বাংলা ব্যাংকের পার্সোনাল লোনের পরিমাণ, সুদ, ও মেয়াদ উল্লেখ করা হলো-
লোনের পরিমাণ (সর্বনিম্ন) | ৫০ হাজার |
---|---|
লোনের পরিমাণ (সর্বোচ্চ) | ২ লাখ |
মেয়াদ | ১ থেকে ৫ বছর |
সুদের হার (নতুন লোনের ক্ষেত্রে) | ৮% |
সুদের হার (অন্য ব্যাংক থেকে টেক-ওভার) | ৭.৫০% |
-- | -- |
প্রসেসিং ফি (নতুন লোনের ক্ষেত্রে) | ০.৫ – ১% |
প্রসেসিং ফি (অন্য ব্যাংক থেকে টেক-ওভার) | নেই |
ডাচ বাংলা ব্যাংক হোম লোন
যদি আপনার একটি বাড়ি তৈরি করার ইচ্ছা থাকে তবে আপনি চাইলে ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে পারেন। ডাচ বাংলা ব্যাংকের হোম লোন নিলে বড় অংকের টাকা লোন নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আপনি ২ কোটি টাকা পর্যন্ত লোন পেতে পারেন। যা দিয়ে আপনি আপনার বাড়ির খরচ বের করতে পারবেন।
হোম লোনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে হোম লোন গ্রহণ করার জন্য আপনার বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে। যেসব কাগজপত্র ছাড়া আপনি ডাচ বাংলা ব্যাংকের হোম লোন গ্রহণ করতে পারবেন না তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রে ফটোকপি
- আবেদনকারীর ইউটিলিটি বিলের কপি যেমন গ্যাস, পানি এবং বিদ্যুৎ বিল।
- আবেদনকারীর সম্প্রতি তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি।
- কর্মচারী বা চাকরিজীবী ব্যক্তিদের ও ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে অফিস আইডি কার্ড বা বিজনেস কার্ড।
- এপোয়েন্টমেন্ট লেটার। (চাকুরিজীবীদের ক্ষেত্রে)
- ট্যাক্স সার্টিফিকেট।
- বাড়ি বা সম্পত্তির লিজ চুক্তিপত্র।
- বিগত ১ বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- জমি সংক্রান্ত ডকুমেন্টস:
- আবেদনকারীর মূল দলিলের কপি।
- জমির মালিক ও ক্রেতার চুক্তিপত্র দলিলের কপি।
- SA, CS, DCR, RS, মিউটেশন, এবং শেষ নম্বরযুক্ত কাগজের দলিল বা নথি।
- খতিয়ান এসি ল্যান্ড দ্বারা মিউটেশন সঠিকভাবে প্রত্যায়ন।
- বিয়া চুক্তি ও মৌজা ম্যাপের ফটোকপি।
- আজমালি জমি হলে তার নিবন্ধিত পার্টিশন দলিল।
যারা পার্সোনাল লোন গ্রহণ করতে পারবে
যদি আপনি ডাচ বাংলা ব্যাংকের হোম লোন গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তবে আপনি এই লোন গ্রহণ করতে পারবেন কি না এই বিষয়ে জেনে রাখা জরূরী। যারা ব্যক্তিগত ঋণ নিতে পারে এবং ঋণ নেওয়ার জন্য কী কী যোগ্যতা প্রয়োজন তা নীচে উল্লেখ করা হল-
- বিভিন্ন পেশাজীবি
- বাড়ির মালিক
- নূন্যতম আয় মাসিক ৩০ হাজার
- সর্বনিম্ন বয়সসীমা 18 বছর এবং সর্বোচ্চ থেকে 70 বছর
- বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
ডাচ বাংলা ব্যাংকের হোম লোনের পরিমাণ, সুদ, ও মেয়াদ:
ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা পর্যন্ত লোন গ্রহণ করা যাবে। তাছাড়াও ডাচ বাংলা ব্যাংক হোম লোনের বড় সুবিধা হচ্ছে ২৫ বছর পর্যন্ত আপনি লোন শোধ করার সময় পাবেন।
হোম লোনের পরিমাণ (সর্বনিম্ন) | ২ লাখ |
---|---|
হোম লোনের পরিমাণ (সর্বোচ্চ) | ২ কোটি |
সুদের হার (নতুন লোনের ক্ষেত্রে) | ৭.৫০% |
সুদের হার (অন্য ব্যাংক থেকে টেক-ওভার) | ৭.০০% |
প্রসেসিং ফি (নতুন লোনের ক্ষেত্রে) | ০.৫% – ১% |
প্রসেসিং ফি (অন্য ব্যাংক থেকে টেক-ওভার) | নেই |
শেষ কথা: ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি
উপরোক্ত আলোচনায় আজকে আমি আপনাদের সাথে ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম সমন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করালাম। আমাদের যেকোন সময়ে বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যাংক লোনের প্রয়োজন হতে পারে। তাই আপনারা যারা ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে চান তারা আজকের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। যদি এই পোস্টটি আপনার কাছে তথ্যবহুল মনে হয় তবে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url