১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা ও কবিতা

জাতীয় শোক দিবস রচনা পড়ে বিভিন্ন প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। কেননা বিগত সালের বিভিন্ন পরীক্ষায় জাতীয় শোক দিবস রচনা লিখতে বলা হয়েছিল। তাছাড়াও স্কুল কিংবা কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষায় জাতীয় শোক দিবস রচনাটি প্রশ্নে অনেকবার এসেছে। 

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা ও কবিতা

তাই আপনারা যারা এবছর প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন তারা ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা পড়ে মুখস্থ করে রাখতে পারেন। আজকের এই পোস্টটি জাতীয় শোক দিবস রচনা ও কবিতা নিয়েই সাজানো হয়েছে। তাই এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইল। 

১৫ আগস্ট সম্পর্কে কিছু তথ্য  

বাঙ্গালী জাতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হলো ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সাল।  বাংলাদেশের এটি একটি কালো অধ্যায়, এই দিনটিতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গভীর আঘাত হানে এবং দেশকে এক অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়।  

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তারিখ ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর বাসায় হামলা চালায় এবং তাকে সপরিবারে হত্যা করে। এতে করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্থপতি এবং জাতির জনক হারিয়ে ফেলে দেশ। এই হত্যাকাণ্ডের ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির হয়ে পড়ে এবং দেশ দীর্ঘদিনের জন্য অস্থিরতার মধ্যে চলে যায়। 

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা

বিভিন্ন প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য জাতীয় শোক দিবস রচনা পড়ে মুখস্থ করে রাখা প্রয়োজন। বর্তমান ১৫ আগস্ট তারিখে, স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানা কর্মসূচির আয়োজন করে। এ সঅকল কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম রচনা প্রতিযোগিতা, কবিতা প্রতিযোগিতা ও অংকন প্রতিযোগিতা। নিচে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা ও কবিতা তুলে ধরা হলো। আপনারা পড়ে মুখস্থ করতে পারেন।  

ভূমিকা: 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্থপতি এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। তিনি বাঙালি জাতির স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার জন্য নিরন্তর কাজ করেছেন। তার হত্যাকাণ্ড ছিল বাংলাদেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। । স্বাধীনতার স্থাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অসীম দক্ষতা ও যোগ্যতা সম্পন্ন একজন মানুষ। তাঁর ছিল মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার মতো অসাধারন বজ্রকণ্ঠ। অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে তাঁর বিপুল খ্যাতি ছিল। অথচ সবার সেরা আর বাঙালির প্রাণপ্রিয় এই নেতাকে ঘাতকেরা কি নিষ্ঠুরভাবেই না হত্যা করলেন। শুধু তাকে নয় বরং তার পরিবার সহ সবাইকে হত্যা করে। ১৫ই আগস্ট জাতির জীবনের এক কলঙ্কময় দিন। তাই এই দিবসটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে বাঙালি জাতি। 

যতদিন রবে পদ্মা যমুনা

গৌরি মেঘনা বহমান,

ততকাল রবে কীর্তি তোমার

শেখ মুজিবুর রহমান

প্রেক্ষাপট:

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ দ্রুত উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু কিছু শক্তি এই উন্নতি সহ্য করতে পারছিল না। তারা বঙ্গবন্ধুকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করে দেশকে অস্থির করার চক্রান্ত করছিল। 

সেনাবাহিনীর প্রতি উপেক্ষা:

হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কারণ হিসেবে সেনাবাহিনীর একটি অংশের অসন্তোষকে দায়ী করা হয়। বঙ্গবন্ধুর সময় সেনাবাহিনীতে কিছু পরিবর্তন আনা হয় যা সেনাবাহিনীর একটি অংশকে অসন্তুষ্ট করে তোলে।

রাজনৈতিক কারণ:

রাজনৈতিক কারণও এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। বঙ্গবন্ধুর এক দলীয় শাসন এবং তার জনপ্রিয়তা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যার কারণে তাকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। 

সামরিক অভ্যুত্থান:

১৫ আগস্ট ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত করে এবং বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে।

১৫ আগস্ট যাদের হত্যা করা হয়:

১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্য, মন্ত্রী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, আবদুর রব সেরনিয়াবাত প্রমুখ। 

১৫ ই আগস্ট পরবর্তী ঘটনা:

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। দেশে একের পর এক সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে এবং গণতন্ত্রের ধারা ব্যাহত হয়।

খুনিদের বিচার কার্যক্রম:

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম করা দীর্ঘদিন ধরে চলে। অনেক খুনিকে ধরে ফাঁসি দেওয়া হয়। তবে এখনও অনেক অজানা রয়ে গেছে। 

হত্যাকাণ্ডে যাঁরা জড়িত ছিলেন:

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে অনেক সামরিক কর্মকর্তা এবং রাজনীতিবিদ জড়িত ছিলেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দেশত্যাগ করেছিল এবং কেউ কেউ দেশে ফিরে আসার পর গ্রেপ্তার হয়েছিল।

উপসংহার:

১৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি কালো অধ্যায়। এই হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়কে চিরতরে ক্ষতবিক্ষত করেছিল। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বাস্তবায়িত করতে আমাদের সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

জাতীয় শোক দিবস কবিতা

অন্ধকারের আঁধারে

এক রক্তাক্ত সূর্যাস্ত,

এক কালো অধ্যায়।

জাতির জনকের বক্ষে,

বাজলো গুলির নায়।


ধানমন্ডি ৩২ নম্বর,

মৃত্যুর কান্না জাগে।

স্বাধীনতার স্বপ্ন ভাঙা,

দেশ শোকে আচ্ছন্ন হয়ে থাকে।


বঙ্গবন্ধুর হাসি মুখ,

দেখতে চাই আরো।

তার স্বপ্নের সোনার বাংলা,

গড়তে চাই আমরা।


কিন্তু নিষ্ঠুর হাত,

ছিনিয়ে নিল সব।

এক অন্ধকার রাতে,

দেশ হয়ে গেল অন্ধ।

তবুও আশা আছে,

মনে রাখবো তোমায়।

জাতির পিতা, তুমি আমার,

চিরদিন তোমার কথা মনে রাখবো।


শোক দিবস

শরিফ আহমাদ


ঐতিহাসিক শোক দিবসের

রক্ত ঝরা গল্প

লিখছি ছড়ায় অল্প !

আগষ্ট মাসের পনেরো তারিখ


আধার ঘেরা রাতে

দেশদ্রোহীরা হামলা চালায়

মহান নেতার গা’তে ।

তার আরো যে স্বজন ছিলো


পায় যেখানে যাকে

হত্যা করে তাকে ।

দেশ প্রকৃতির রঙিন স্বপ্ন

শেষ করেছে তারা


ওদের একদিন বিচার হবে

কেউ পাবে না ছাড়া ।

প্রতি বছর আগষ্টের সেই

দিন করা হয় স্মরণ


বুকের রক্ত ক্ষরণ।

অন্ধকার রাতের কালো ছায়া


শোকের কালো মেঘ ভাসে আকাশে,

দেশ শোকে নিমজ্জিত, মন কাঁদে।

বঙ্গবন্ধুর রক্ত ঝরে পড়েছে মাটিতে,

জাতির জনক হারিয়েছে জীবন স্বাধীনতার পথে।


ধানমন্ডির ৩২ নম্বর, মৃত্যুর কান্না বাজে,

স্বাধীনতার স্বপ্ন ভেঙে গেছে এক আঘাতে।

সোনার বাংলার স্বপ্ন ছিল তার,

হৃদয়ে জ্বালিয়েছিল সে আশার আলো।


আজও মনে হয়, তার হাসি, তার কথা,

আজও মনে হয়, সে আমাদের মাঝে আছে।

তার আদর্শ ধরে, আমরা এগিয়ে যাব,

সোনার বাংলা গড়ব, এই প্রতিজ্ঞা করি।

 


শোক দিবস

শরিফ আহমাদ


শোক দিবসের উপলক্ষে

হয় যে কত কিছু

শ্রদ্ধা নিয়ে লেখার জন্য

মাথা করি নিচু ।


প্রধানমন্ত্রীর শোকের বার্তা

পত্রিকাতে আসে

দোয়া-মাহফিল স্মরণ সভা

চোখের পাতায় ভাসে ।


বিদ্যালয় বা ক্লাবগুলোতে

নানান অনুষ্ঠানে

জাতির পিতার গল্প-কথা

সামনে সবাই আনে ।


কাঙালিভোজ জমে ওঠে

উদ্যোগী হয় সরকার

দেশ-দরদীর জন্য এটা

পালন করা দরকার।


শেষ কথাঃ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা ও কবিতা নিয়ে

১৫ আগস্ট, বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। এই দিনটিতে আমরা আমাদের জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হারিয়েছিলাম। এই হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়কে চিরতরে ক্ষতবিক্ষত করেছিল। উপরোক্ত আলোচনায় আজকে আমি আপনাদের সাথে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা ও কবিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যদি এই পোস্টটি আপনার কাছে তথ্যবহুল মনে হয় তবে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এছাড়াও আপনি একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা পড়তে পারেন। ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

বিজ্ঞাপন